Thursday 13 February 2014

"আমার শৈশব"

আমার কৈশোরবেলায় আমি খুব "আমার শৈশব" বইটা পড়তে ভালবাসতাম। আমার আর বিট্টুর দুজনেরটাই মাঝে মাঝে নিয়ে বসে পড়তাম, বহুবার পড়লেও পুরনো হতো না। বিশেষ করে যে বয়েসটায় বিট্টু নরেন্দ্রপুরে হস্টেলে চলে গেল, আরা আমাদের দুপুরকালীন যাবতীয় আম-মাখা, পেয়ারা-পারা, পুজোসংখ্যা নিয়ে কাড়াকাড়ি করার রোজকার অভ্যাশে হঠাৎ একটা বিশাল শূন্যতা এসে পড়ল, তখন এই বইদুটো আমাকে অদ্ভুতভাবে ভরিয়ে রাখত।



আমাদের স্কুলের ইউনিফর্ম পরে স্টুডিওতে গিয়ে তোলা প্রথম ছবি, অন্নপ্রাশনের বিবরণ, প্রথম বসা, হাঁটা, কথা বলা, সম্বোধন, স্কুল যাওয়া, সার্কাস দেখা, পিকনিক যাওয়া টাইপের আপাতঃ নিরীহ ঘটনাগুলো মা যে এই ঘটনাগুলো যত্ন করে আদর করে লিখে রেখেছিল, না হলে এগুলো ধরা থাকত না, এই ব্যাপারটা কিন্তু তখন বুঝতাম না। এখন বুঝি। কারণ ধপাসের দু'খানা বাংলা আর আরও তিনখানা ইংরাজি বেবি-বুক য়ামার আলমারিতে প্রায় ধরাই থেকে গেছে, অথচ ওর শৈশব কথা বলা, হাঁটা, দৌড়নো, এমনকি বাড়ির গন্ডি পেরিয়ে প্লে-স্কুলেও পৌঁছে গেছে আজ প্রায় ছয়মাস হয়ে গেল!

জানি মা'র মতো হতে পারব না, কোনদিনই না, তা সে যতই কাঠখড় পোড়াব ভাবি না কেন। (খবরদার, মা যেন কখনও না জানে আমি এই কথা বলেছি!)

কিন্তু অন্তত ধপাস যখন বুঝতে শিখবে, তখন ওর ছোটবেলাটা ওকে এভাবে উপহার দেওয়ার যে তৃপ্তি, সেটার লোভটা কাটানো কঠিন। এই ব্যাপারটা আজি এ প্রভাতে হঠাৎ কেন খেয়াল হল, সেটা নিজেও জানিনা, কিন্তু, ভাগ্যিশ!

দেখা যাক!




No comments:

Post a Comment

Did you like it? Did you not? Please leave a comment...